পারফেক্ট পায়েস রান্নার রেসিপি! মিষ্টি স্বাদে মাত করুন
সেরা রোস্ট রান্নার রেসিপি! চমকে দিন সবাইকে
Fogg Perfume: The Ultimate Guide to Choosing Your Signature Scent

সেরা রোস্ট রান্নার রেসিপি! চমকে দিন সবাইকে

রোস্ট! নামটা শুনলেই জিভে জল চলে আসে, তাই না? বিয়েবাড়ি, জন্মদিন কিংবা যেকোনো উৎসবে রোস্ট থাকা মানেই ভোজটা জমে গেল। কিন্তু সবসময় কি আর বিয়েবাড়ির রোস্টের জন্য অপেক্ষা করা যায়? তাই আজ আমি আপনাদের শেখাবো, কিভাবে খুব সহজে ঘরেই পারফেক্ট স্বাদের রোস্ট তৈরি করা যায়। আসুন, শুরু করা যাক!

রোস্ট রান্নার প্রস্তুতি: কী কী লাগবে?

রোস্ট বানানোর আগে আমাদের কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। চিন্তা নেই, সবকিছু আপনার রান্নাঘরেই পেয়ে যাবেন!

উপকরণ তালিকা

  • চিকেন: ১ কেজি (বড় টুকরা করে কাটা)
  • পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
  • পেঁয়াজ বাটা: ২ টেবিল চামচ
  • আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • জিরা বাটা: ১ চা চামচ
  • ধনিয়া বাটা: ১ চা চামচ
  • হলুদ গুঁড়া: ১/২ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়া: ১ চা চামচ (স্বাদমতো)
  • গরম মশলা গুঁড়া: ১ চা চামচ
  • টক দই: ১/২ কাপ
  • কাজুবাদাম বাটা: ২ টেবিল চামচ
  • কিশমিশ বাটা: ১ টেবিল চামচ
  • কেওড়া জল: ১ চা চামচ
  • গোলাপ জল: ১ চা চামচ
  • চিনি: ১ চা চামচ (স্বাদমতো)
  • লবণ: স্বাদমতো
  • সয়াবিন তেল: পরিমাণ মতো
  • ঘি: ২ টেবিল চামচ
  • এলাচ: ৩-৪টি
  • দারুচিনি: ২-৩ টুকরা
  • তেজপাতা: ২-৩টি
  • কাঁচামরিচ: ৪-৫টি (ফালি করা)

প্রস্তুতি কিভাবে নেবেন?

  • প্রথমে চিকেন ভালো করে ধুয়ে নিন।
  • চিকেনের টুকরাগুলোতে সামান্য লবণ ও হলুদ মেখে অন্তত ৩০ মিনিট রেখে দিন। এতে মাংসের ভেতর মসলা ভালোভাবে ঢুকবে।
  • পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরা, ধনিয়া – সব মসলা বেটে/ব্লেন্ড করে নিন।
  • কাজুবাদাম ও কিশমিশ সামান্য গরম পানিতে ভিজিয়ে নরম করে বেটে নিন।

রোস্ট রান্নার পদ্ধতি: ধাপে ধাপে

এবার চলুন, মূল রান্নার দিকে যাওয়া যাক। আমি যেভাবে বলছি, সেভাবে করলে আপনার রোস্ট হবে একদম পারফেক্ট!

প্রথম ধাপ: চিকেন ভাজা

  • একটি কড়াইয়ে তেল গরম করুন। তেল মাঝারি আঁচে গরম হলে চিকেনের টুকরাগুলো হালকা সোনালী করে ভেজে নিন। খুব বেশি ভাজবেন না, শুধু ওপরের দিকটা একটু ভাজা হলেই হবে।
  • ভাজা চিকেনগুলো একটি পাত্রে তুলে রাখুন।

দ্বিতীয় ধাপ: মসলা কষানো

  • কড়াইয়ে আরও একটু তেল ও ঘি দিন। এতে এলাচ, দারুচিনি ও তেজপাতা দিয়ে একটু ভেজে নিন।
  • পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা সোনালী করে ভাজুন। এরপর পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, রসুন বাটা, জিরা বাটা ও ধনিয়া বাটা দিয়ে ভালোভাবে কষাতে থাকুন।
  • হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান। মসলা কষানোর সময় সামান্য পানি দিতে পারেন, যাতে মসলা পুড়ে না যায়।
  • মসলা থেকে তেল ছেড়ে দিলে বুঝবেন কষানো হয়ে গেছে।

তৃতীয় ধাপ: দই ও বাদাম মেশানো

  • এবার টক দই দিয়ে মসলার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। অল্প আঁচে কিছুক্ষণ কষাতে থাকুন।
  • কাজুবাদাম বাটা ও কিশমিশ বাটা দিয়ে দিন। ভালোভাবে মিশিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
  • গরম মশলা গুঁড়া দিয়ে মিশিয়ে নিন।

চতুর্থ ধাপ: চিকেন যোগ করা

  • ভেজে রাখা চিকেনের টুকরাগুলো কড়াইয়ে দিয়ে মসলার সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
  • অল্প আঁচে ঢেকে দিন এবং ২০-২৫ মিনিট রান্না করুন, মাঝে মাঝে নেড়ে দিন।
  • চিকেন সেদ্ধ হয়ে নরম হয়ে এলে কাঁচামরিচ ফালি দিয়ে দিন।

পঞ্চম ধাপ: ফিনিশিং টাচ

  • কেওড়া জল ও গোলাপ জল দিয়ে আলতো করে মিশিয়ে নিন।
  • চিনি দিয়ে স্বাদমতো করে নিন। মিষ্টি স্বাদ আপনার পছন্দ অনুযায়ী বাড়াতে বা কমাতে পারেন।
  • আরও ৫-১০ মিনিট অল্প আঁচে রেখে দিন, যাতে সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে যায়।
  • নামানোর আগে একটু ঘি ছড়িয়ে দিন। এতে রোস্টের স্বাদ আরও বেড়ে যাবে।

পরিবেশন: কিভাবে পরিবেশন করবেন?

গরম গরম সুগন্ধি রোস্ট পরিবেশনের জন্য একদম প্রস্তুত! পোলাও, বিরিয়ানি কিংবা সাদা ভাতের সাথে পরিবেশন করুন, আর উপভোগ করুন দারুণ স্বাদ।

কিছু দরকারি টিপস: রোস্টকে আরও স্পেশাল করতে

  • চিকেন মেরিনেট করার সময় একটু লেবুর রস দিলে মাংস আরও নরম হবে।
  • রোস্টের মসলা ভালোভাবে কষালে এর স্বাদ আরও বেড়ে যায়। তাই তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে মসলা কষান।
  • কাজুবাদাম ও কিশমিশ বাটা রোস্টের স্বাদকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
  • পরিবেশনের আগে একটু বেরেস্তা ছড়িয়ে দিলে দেখতে আরও সুন্দর লাগবে।

রোস্ট নিয়ে কিছু সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ):

রোস্ট নিয়ে আপনাদের মনে কিছু প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। তাই কিছু সাধারণ প্রশ্নের উত্তর নিচে দেওয়া হলো:

রোস্ট রান্নার জন্য কোন তেল ব্যবহার করা ভালো?

রোস্ট রান্নার জন্য সয়াবিন তেল ব্যবহার করাই ভালো। তবে, স্বাদের ভিন্নতা আনতে আপনি সরিষার তেলও ব্যবহার করতে পারেন।

রোস্টের মাংস নরম করার উপায় কী?

রোস্টের মাংস নরম করার জন্য টক দই ও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। মেরিনেট করার সময় এই দুটি উপকরণ ব্যবহার করলে মাংস নরম হবে।

রোস্টে কি চিনি ব্যবহার করা জরুরি?

রোস্টে চিনি ব্যবহার করা জরুরি নয়, তবে এটি স্বাদের ব্যালেন্স তৈরি করে। আপনি যদি মিষ্টি স্বাদ পছন্দ না করেন, তাহলে চিনি বাদ দিতে পারেন।

রোস্ট কতদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়?

রোস্ট সাধারণত ২-৩ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। তবে, টাটকা রোস্টের স্বাদ সবসময়ই সেরা।

রোস্টের মসলা পুড়ে গেলে কী করব?

রোস্টের মসলা পুড়ে গেলে সামান্য গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবং আঁচ কমিয়ে দিন। এতে মসলা পুড়ে যাওয়া থেকে বাঁচবে।

রোস্টের ঝোল ঘন করার উপায় কী?

রোস্টের ঝোল ঘন করার জন্য অল্প পরিমাণে ময়দা বা বেসন পানিতে গুলে মিশিয়ে দিন। এছাড়া, কাজুবাদাম বাটা ব্যবহার করলেও ঝোল ঘন হবে।

রোস্ট কি প্রেসার কুকারে রান্না করা যায়?

হ্যাঁ, রোস্ট প্রেসার কুকারে রান্না করা যায়। তবে, এতে স্বাদ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। প্রেসার কুকারে রান্না করলে সময় কম লাগবে, কিন্তু কড়াইয়ে রান্না করলে স্বাদ বেশি ভালো হয়।

রোস্টের সাথে আর কী কী পরিবেশন করা যায়?

রোস্টের সাথে পোলাও, বিরিয়ানি, সাদা ভাত, নান রুটি, পরোটা ইত্যাদি পরিবেশন করা যায়। এছাড়া, রায়তা ও সালাদ যোগ করলে খাবারের স্বাদ আরও বাড়বে।

রোস্ট এবং রেজালা মধ্যে পার্থক্য কি?

রোস্ট এবং রেজালা দুটোই জনপ্রিয় মাংসের পদ, তবে এদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে:

  • রোস্ট (Roast):

    • রোস্ট সাধারণত একটু শুকনো এবং ভাজা ভাজা হয়।
    • এতে পেঁয়াজ কুচি এবং বাটা উভয়ই ব্যবহার করা হয়।
    • রোস্টে সাধারণত টক দই ব্যবহার করা হয়, যা মাংসকে নরম করে এবং একটি আলাদা স্বাদ যোগ করে।
    • এটি সাধারণত পোলাও, বিরিয়ানি বা সাদা ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়।
  • রেজালা (Rezala):

    • রেজালা একটি হালকা ঝোলযুক্ত পদ।
    • এতে সাধারণত পেঁয়াজ বাটা ব্যবহার করা হয়, কুচি পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয় না।
    • রেজালায় কাজুবাদাম এবং নারকেল বাটা ব্যবহার করা হয়, যা এটিকে একটি ক্রিমি টেক্সচার দেয়।
    • এতে গোলাপ জল এবং কেওড়া জল ব্যবহার করা হয়, যা একটি মিষ্টি এবং সুগন্ধি ফ্লেভার যোগ করে।
    • এটি সাধারণত রুটি, পরোটা বা ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়।

সংক্ষেপে, রোস্ট একটু ভাজা এবং টক স্বাদের হয়, যেখানে রেজালা ক্রিমি এবং মিষ্টি স্বাদের হয়।

রোস্ট রান্নার সময় মাংস লেগে গেলে কি করবো?

রোস্ট রান্নার সময় মাংস কড়াইতে লেগে গেলে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন:

  • আঁচ কমিয়ে দিন: প্রথমত, চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। উচ্চ তাপে রান্না করার কারণে মাংস লেগে যেতে পারে। আঁচ কমালে মাংস ধীরে ধীরে রান্না হবে এবং লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
  • সামান্য পানি যোগ করুন: কড়াইতে সামান্য গরম পানি যোগ করুন। এতে লেগে যাওয়া মসলা এবং মাংস নরম হয়ে আসবে এবং সহজে নাড়াচাড়া করা যাবে। অল্প অল্প করে পানি যোগ করুন এবং খেয়াল রাখুন যেন বেশি ভেজা না হয়ে যায়।
  • নন-স্টিক কড়াই ব্যবহার করুন: সম্ভব হলে নন-স্টিক কড়াই ব্যবহার করুন। এতে মাংস লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
  • নিয়মিত নাড়াচাড়া করুন: রান্না করার সময় নিয়মিত মাংস নাড়াচাড়া করুন, যাতে এটি কড়াইতে লেগে না যায়।
  • ধৈর্য ধরুন: লেগে যাওয়া মাংস তোলার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। ধীরে ধীরে এবং সাবধানে নাড়াচাড়া করে মাংস তুলুন, যাতে এটি ভেঙে না যায়।

রোস্টের জন্য কি ধরণের মশলা ব্যবহার করা হয়?

রোস্টের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত মশলাগুলো ব্যবহার করা হয়:

  • পেঁয়াজ বাটা
  • আদা বাটা
  • রসুন বাটা
  • জিরা বাটা
  • ধনে বাটা
  • হলুদ গুঁড়া
  • মরিচ গুঁড়া
  • গরম মশলা গুঁড়া
  • এলাচ
  • দারুচিনি
  • তেজপাতা

শেষ কথা:

তাহলে দেখলেন তো, রোস্ট রান্না করা কতোটা সহজ? আমি তো সবসময় চেষ্টা করি নতুন নতুন রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। এই রেসিপিটি কেমন লাগলো, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর হ্যাঁ, নিজের হাতে রান্না করা রোস্টের ছবি শেয়ার করতে ভুলবেন না যেন! শুভকামনা!

Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *