বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জাতীয় পরিচয়ের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ হলো জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড। বাংলাদেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের ভোটার তালিকা তৈরি করার সময় এই জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়ে থাকে।
ভোটার আইডি কার্ড চেক |
আজকের ব্লগে আমরা জানবো কিভাবে মোবাইল দিয়ে যে কারো এনআইডি বা ভোটার আইডি কার্ড চেক করা যায়। এ বিষয়ে জানাটা প্রতিটি নাগরিকের জন্য জরুরি।
আমরা অনেক সময় অপরিচিত কারো সাথে আর্থিক লেনদেন বা অন্যকোনো চুক্তি করতে গেলে ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ডের কপি রেখে দিই নিরাপত্তার স্বার্থে।
কিন্তু এখনকার জামানায় নকল এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। ২ মিনিটের ব্যবধানেই যেকেউ নকল এনআইডি তৈরি করে প্রতারণা করতে পারে।
তাই আর্থিক লেনদেন বা কোনো চুক্তির পূর্বে ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে ভোটার আইডি কার্ড চেক করে নিতে হবে। যাচাই করতে হবে সেটি আসল না কি নকল। অন্যথায় আপনিও ভুক্তভোগী হতে পারেন।
ভোটার আইডি কার্ড চেক
আগে সরকারি অফিসিয়াল একটি ওয়েবসাইট চালু ছিল যেটা শুধু ভোটার আইডি কার্ড চেক বা যাচাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাই করার সেই ওয়েবসাইটটি নেই।
তবে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই! এখনও আপনি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেকিং করতে পারবেন। এবং এটি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটা দিয়েই পারবেন।
পোস্টের শেষের দিকে আমরা জানবো ভোটার আইডি কার্ড চেকিং অ্যাপ কোনটি এবং সেটি কিভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানাবো।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
আমরা যারা নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হই বা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করি তারা এটি হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত অধির আগ্রহে থাকি।
যারা নতুন ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত হয়েছেন এবং জানেন না যে কবে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন তারা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে লগিন করে জেনে নিতে পারেন।
এছাড়া যাদের সিম ক্রয় কিংবা অন্য কোনো প্রয়োজনে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার প্রয়োজন তারা এনআইডি কার্ড প্রাপ্তির আগেই ভোটার আইডি কার্ড চেক করার মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।
এসএমএস এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার জানতে ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে NID <space> Form No <space> Birth Date (dd-mm-yyyy) লিখে 105 নাম্বারে পাঠিয়ে দিতে হবে।
ফিরতি এসএমএস এর মাধ্যমে আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার জানিয়ে দেওয়া হবে।
ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক
উপরে দেখানো নিয়মে আপনি ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করে ফেস ভেরিফিকশনের মাধ্যমেও আইডি কার্ড চেক করা যায়।
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চেক করার বিষয়টা একটু জটিল। সেজন্য আজকের ব্লগে শুধু SMS এর মাধ্যমে কিভাবে চেক করবেন সেটি দেখালাম।
পরবর্তীতে আরেকটি নতুন আর্টিকেলে ওয়েবসাইটে লগিন করে কিভাবে ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।
ভোটার আইডি কার্ড চেকিং অ্যাপ
অনেক সময় নানান প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করতে হয়। আর্থিক লেনদেন কিংবা অপরিচিত কারো সাথে কোনো কাজ করতে গেলে সেই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র আসল না কি নকল তা জানাটা খুবই জরুরি।
তাই আপনি যেন খুব সহজে এবং অল্প সময়ে অন্যকারো ভোটার আইডি কার্ড চেক করতে পারেন তার একটা সুন্দর সমাধান এনেছি।
গুগল প্লে স্টোর থেকে ফ্রিতে ভোটার আইডি কার্ড চেকিং অ্যাপ ডাউনলোড করে কোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই অন্যের এনআইডি কার্ড যাচাই করতে পারেন।
ধাপ-১: এজন্য প্রথমেই গুগল প্লে স্টোরে যেতে হবে এবং সার্চ বারে NID Checker BD লিখে সার্চ করুন। অথবা এখানে ক্লিক করে সরাসরি অ্যাপটি ইনস্টল করতে পারেন।
ধাপ-২: অ্যাপটি আপনার ফোনে সফলভাবে ইনস্টল হয়ে গেলে এরপর সেটি ওপেন করুন।
ভোটার আইডি কার্ড চেকিং অ্যাপ |
ধাপ-৩: অ্যাপটি ওপেন করলে উপরের ছবির মতো একটা পেইজ দেখতে পাবেন। এখানে যে ব্যক্তির ভোটার আইডি চেক করতে চান তার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার ও জন্ম তারিখ লিখুন।
সেই সাথে যেকোনো একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। আপনি চাইলে এখানে নিজের মোবাইল নাম্বার অথবা অন্যকারো মোবাইল দিতে পারেন।
ধাপ-৪: এবার “ভেরিফাই করুন” লেখা বাটনে ক্লিক করলেই জাতীয় পরিচয়পত্রের সকল তথ্য দেখতে পারবেন।
যদি তথ্য দেখতে পান তাহলে ভোটার আইডি কার্ডটি আসল। আর যদি কোনো তথ্য না আসে তাহলে ভোটার কার্ডটি আসল নয়। এজন্য এটির কোনো তথ্য সার্ভারে নেই।
আরও জানুনঃ ঘরে বসেই নতুন জন্ম নিবন্ধন করুন
ইতিকথা
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে চারিদিকে প্রতারণা ও প্রতারক চক্র তত বেশি প্রসারিত হচ্ছে। আমরা অনেকেই অনলাইনে পুরনো না সেকেন্ড হ্যান্ড ফোনের বিভিন্ন লোভনীয় অফার দেখে তা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করি।
একটা প্রতারক চক্র আমাদের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দিনের পরে দিন প্রতারণা করে যাচ্ছে। আপনিও যেন ভুক্তভোগী না হন সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
অনেকেই চোরাই ফোন নিজের বলে দাবী করে এবং অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা করে। তারা নিরাপত্তা সরূপ আপনাকে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিতে চায়।
কিন্তু আপনি কি জানেন তাদের এই জাতীয় পরিচয়পত্র অধিকাংশ সময় ভুয়া বা ফেইক হয়ে থাকে। কীভাবে জানবেন জাতীয় পরিচয়পত্রটি ভুয়া কিনা?
এই সমাধান দিতেই উপরে এতগুলো কথা লিখে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম এবং মোবাইল দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেকিং অ্যাপ সম্পর্কে জানিয়েছি।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টে জানিয়ে যাবেন।