স্বাগত জানাচ্ছি সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম বিষয়ক নতুন একটি ব্লগে। আপনারা যারা সংবাদ মাধ্যমের সাথে জড়িত, তাদের কাছে অতিপরিচিত একটি বিষয় হলো প্রতিবেদন।
সংবাদ কর্মীরা মাঝে মধ্যেই সমাজের বিভিন্ন সমস্যা, দূর্নীতি এবং ঘটনা ইত্যাদি নিয়ে প্রতিবেদনে তুলে ধরে। এতে সমাজের অনেক সমস্যা, গোঁড়ামি জনসাধারণের সামনে উঠে আসে।
আমরা যারা নিয়মিত পত্রিকা পড়ে থাকি, তারাও মাঝে মধ্যে পত্রিকাতে এসব নানানরকম বিষয় নিয়ে নানা সময় প্রতিবেদন দেখতে পাই।
এছাড়াও, আমরা যারা পড়াশোনা করি তাদেরকেও প্রতিবেদন টপিক সম্পর্কে পড়তে হয় এবং জানতে, লিখতে হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনে
প্রতিবেদন ঠিক কতটা অপরিহার্য? আমরা এর গুরুত্ব বুঝে থাকলেও, অনেকেই এটি যথাযথভাবে লিখে উঠতে পারি না। তাই, আমরা যারা প্রতিবেদন লিখতে বা উপস্থাপন করতে পারি না তাদের কথা মাথায় রেখেই আজ আমাদের এই আর্টিকেল।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম |
আজকে আপনাদের প্রতিবেদন কি, প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও এ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।
প্রতিবেদন কি?
ইংরেজি “Report” শব্দ হতে আগত বাংলা শব্দ হলো প্রতিবেদন। নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে বিষয়বস্তু অনুসন্ধানের মাধ্যমে সত্য-মিথ্যা যাচাই করে সবার সামনে উপস্থাপিত বিবৃতি বা নথিপত্রই হলো প্রতিবেদন।
প্রতিবেদন কি তা অনেকেই বুঝতে পারে না। তাদের জন্য আরেকটু সহজ করে বলছি।
প্রতিবেদনে সবসময় বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিয়ে নির্ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়। এটি প্রতিবেদক নিজস্ব কোনো মনগড়া উক্তি দিয়ে লিখতে পারে না। সমাজে সুনির্দিষ্ট একটি বিষয়ের সঠিক, নির্ভুল প্রামাণ্যচিত্রই হলো প্রতিবেদন।
গঠনরীতি এবং উপস্থাপনের ভিত্তিতে দাপ্তরিক, সংবাদ মাধ্যম, অপ্রাতিষ্ঠানিক, তদন্ত, প্রস্তাবনা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন হয়ে থাকে। যেমন-
- দাপ্তরিক প্রতিবেদন
- সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন
- অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- তদন্ত প্রতিবেদন
- প্রস্তাবনা প্রতিবেদন
- গবেষণামূলক প্রতিবেদন
তবে আজকে আমাদের মূল ফোকাস সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদনের নিয়ম সম্পর্কে। আজকে আপনারা জানতে পারবেন নমুনাসহ সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
সংবাদ প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমাদের সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জনসাধারণ থেকে শুরু করে সমাজের উচ্চ স্তরের লোকজনের সামনে তুলে ধরা হয়।
একটি সংবাদ প্রতিবেদনের বেশ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। যেমন-
১. তারিখ: দরখাস্ত অথবা প্রতিবেদন যেকোনোটিতেই তারিখ খুবই গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কোনো প্রতিবেদন লিখতে প্রথমে সঠিক তারিখ ব্যবহার করা হয়েছে কি না সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নইতো প্রতিবেদনের মাধ্যমে যে আর্জি জানানো হয়, সেটা ব্যর্থ হবে।
২. প্রেরক: প্রতিবেদনটি যার বরাবর লিখবেন, তিনিই হবেন প্রেরক। সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশে প্রেরক হিসেবে সাধারণত পত্রিকার সম্পাদক বরাবর লেখা হয়ে থাকে।
৩. ঠিকানা: এ অংশে যে পত্রিকার যে এলাকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হবে, সেই পত্রিকার অফিসের ঠিকানা এখানে দিতে হবে।
৪. বিষয়: প্রতিবেদন লেখার মূল কারণ এখানে এক লাইনে উল্লেখ করতে হবে।
৫. অনুরোধমূলক বাক্য: এ অংশে পত্রিকার সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে উক্ত পত্রিকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশের জন্য অনুরোধমূলক অথবা কৃতজ্ঞতামূলক বাক্য লিখতে হবে।
৬. শিরোনাম: এ অংশটি পাঠকের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ। এই অংশটি আকর্ষণীয়মূলক বাক্য হওয়া উচিত, যাতে পাঠক পরবর্তীতে আরো পড়ার আগ্রহ পায়। শিরোনাম সাধারণত এক লাইনের একটি বাক্য হয়ে থাকে।
৭. বিষয়বস্তুর বিস্তারিত বর্ণনা: এ অংশে প্রতিবেদনেের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লেখা হয়ে থাকে। এখানে মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে তথ্য অনুসন্ধান করে সত্য মিথ্যা যাচাই করে উপযুক্ত প্রমাণসহ পর্যালোচনা করে সার্বিক দিক এখানে উল্লেখ করা হয়। কখনোই মূল বিষয় উপস্থাপিত না করে সেটার সারাংশ উল্লেখ করা হয় না।
এছাড়াও, এ অংশে প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাওয়া হয়।
৮. প্রতিবেদকের নাম-ঠিকানা: যিনি প্রতিবেদন লেখেন তাকে প্রতিবেদক বলে। এ অংশ উক্ত প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা উল্লেখ করা হয়।
৯. খাঁম: এ অংশে প্রতিবেদকের তথ্য এবং প্রাপকের তথ্য দিয়ে একটি খাম আকানো হয়ে থাকে।
উপরে প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানালাম। এবার আপনাদের সামনে কিছু নমুনা তুলে ধরব।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন
১৫ই জুলাই, ২০২৩
বরাবর
সাধারণ সম্পাদক
প্রথম আলো
কারওয়ান বাজার, ঢাকা
বিষয়: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে প্রতিবেদন।
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে আপনার বহুল প্রচলিত “প্রথম আলো” পত্রিকায় “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস” শীর্ষক প্রতিবেদনটি নির্দিষ্ট কলামে প্রকাশ করে আমাকে বাধিত করবেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস
সম্প্রতি আমাদের সামনে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আমাদের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশছোঁয়া। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে সকল পণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। তাঁর বড় উদাহরণ- বেশ কয়েকদিন আগে কাঁচা মরিচ যা ১০০ টাকা কেজি, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০০ টাকা কেজি হয়ে যায়।
এরকমই প্রায় সবধরনের পণ্যেরই একই অবস্থা। এ পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজনের অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে করুণ। তারা এই দ্রব্যসমূহের আকাশছোঁয়া দামের সাথে এঁটে উঠতে পারছে না। যার ফলে স্বল্প আয়ের এবং দিনমজুররা একবেলা পেটের খাবার যোগাতে পারছে তো আরেকবেলা পারছে না।
আমরা মনে করি এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কিছু লোভী ব্যবসায়ী নিজেদের বাড়তি মুনাফার জন্য বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে পণ্য থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে পণ্যের অভাবের কথা জানিয়ে। তারা দ্রব্যাদি সিন্ডিকেট করে রাখছে। ফলে, তারা প্রতিটা দ্রব্যের ন্যায্য মূল্য হতে দ্বিগুণ -তিনগুণ পর্যন্ত দাম নিচ্ছে।
এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমরা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজন না খেতে পেয়ে মরে যাবো একদিন। শুধু যে খাবারের জিনিসের দাম চড়া তা নয়, এখন লেখাপড়ার দ্রব্যাদি থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিকস দ্রব্যাদির দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।
কিছু স্বল্প আয়ের পরিবারতো পড়াশোনার অতিরিক্ত খরচ সামাল দিতে না পেড়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছে এবং তাদেরকে নানারকম ঝুকিপূর্ণ কর্মে লাগিয়ে দিয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন নিরক্ষর জনগোষ্ঠী বাড়ছে এবং তার সাথে সাথে ছোট ছোট বাচ্চাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে বয়স অনুপযোগী বিভিন্ন ভারী কাজের সাথে যুক্ত হয়ে।
এমতাবস্থায় চাই, প্রশাসনের তীব্র তদারকি। ভোক্তা অধিদপ্তর যদি নিয়মিত দোকান-পাট গুলোতে তদারকি করে এবং অসাধু, লোভী ব্যবসায়ীদেরকে শাস্তির আওতায় আনে তাহলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির নাভিশ্বাস হতে জনজীবন অনেকটাই মুক্তি পাবে।
এ পরিস্থিতি সামাল দিতে আরো প্রয়োজন জনগণের সতর্কতা। তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, খুব দ্রুত আপনারা তৎপর হোন।
তা না হলে জনাসাধারণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠবে। তাদেকে সামাল দেওয়া তখন কষ্ট হয়ে যাবে। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।
আশা করি আমাদের এই প্রতিবেদনটি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হবে এবং খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
জাহিদ হাসান ( এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিবেদন
সবিনয় নিবেদন এই যে, আপনার বহুল প্রচলিত পত্রিকা “দৈনিক ইত্তেফাক” এ সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জনসাধারণের সতর্কতা সৃষ্টি করে দেওয়ার মাধ্যমে আপনার মর্জি একান্তভাবে কামনা করছি।
বিনীত
ফজলে করিম
রাজাপুর, সুনামগঞ্জ
প্রাণনাশের বড় হুমকি সড়ক দূর্ঘটনা
সড়ক দূর্ঘটনা জাতীয় জীবনে প্রাণনাশের এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন চারিদিকে অহরহ সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে।” মরে যাওয়া স্বাভাবিক কিন্তু বেঁচে থাকা অস্বাভাবিক ” বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এই কথাটি তিক্ত সত্য।
প্রতিদিন সড়ক দূর্ঘটনা অনেক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। অসহায় হয়ে পড়ছে ওইসব পরিবারের লোকজনেরা। এইতো কিছুদিন আগেই ঢাকাগামী একটি বাস যশোরের আরামপাড়ায় বড়সড় এক দূর্ঘটনার সম্মুখীন হয়।
বাসটি সামনের গাড়িকে সাইড দিতে যেয়ে খাদের মধ্যে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৬ জন মারা যায়। যাদের মধ্যে ৩ জনই একই পরিবারের এবং অনেক মানুষ আহত হয়। ঠিক এরককম ঘটনা প্রতিদিন আমাদের চারপাশে ঘটছে, যা একটু পত্রিকা খুলে দেখলেই বোঝা যায়। দূর্ঘটনার শিকার হয়ে পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী ব্যক্তি মারা যাচ্ছে অথবা জখম হয়ে ঘরে পড়ে থাকছে। তখন তাদের পরিবার এক অসহায়, করুন দশার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।
এসব দূর্ঘটনার পিছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
- গাড়ি চালকদের মধ্যে আগে যাওয়ার টেন্ডেন্সি, যার ফলে তারা প্রতিযোগিতায় নামছে।
- অদক্ষ, শারীরিক সুস্থতা বিহীন গাড়ি চালক দ্বারা গাড়ি চালানো হচ্ছে।
- কমবয়সী তরুণেরা গাড়ি চালানোর কারণে, যাদের কোনো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা নেই।
- নেশা করে ঘুম চোখে গাড়ি চালানোর কারণে এবং তারা রাস্তায় গাড়ি চালানোর সুনির্দিষ্ট নিয়মগুলো উপেক্ষা করার কারণে।স
- সর্বোপরি, জনসাধারণের রাস্তা পারাপারে অসতর্কতার কারণে।
এ পরিস্থিতিতে প্রশাসনকে কঠোর অবস্থানে রুপ নিতে হবে। নইতো সড়ক দূর্ঘটনা আমাদের জাতীয় জীবনে এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। ঠেলে দিবে আমাদের অকালমৃত্যুর দিকে। বেশ কিছু কর্মসূচির মাধ্যমে সড়ক দূর্ঘটনা রোধ করা যায়। যেমন-
- কমবয়সী, অদক্ষ এবং শারীরিকভাবে সুস্থ নয় এমন ব্যক্তিদের ড্রাইভিং লাইসেন্স না দেওয়া।
- ড্রাইভারদের ওভারটেকিং এবং নিয়ম ভঙ্গ করতে দেখা গেলে জরিমানা অথবা শাস্তির আওতায় নিয়ে আনা।
- জনসাধারণকে বিভিন্ন ব্যানার,ফেস্টুন এবং মানববন্ধনের মাধ্যমে সতর্ক করে তোলা।
- রাস্তা পারাপারে জ্রেবা ক্রসিং ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
- রাস্তায় চলাচলের সময় অথবা গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ব্যবহার না করা।
- ড্রাইভারদের ঘুম চোখে এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাতে নিষেধ করা। প্রয়োজন কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
উপরের এই কর্মসূচিগুলো পালন করলে সড়ক দূর্ঘটনা অনেকাংশে কমবে। তাই আমরা জনসাধারণ অবিলম্বে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ফজলে করিম (এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
রাজাপুর সুনামগঞ্জ
আরও জানুনঃ চাকরির সিভি লেখার নিয়ম
খাদ্যে ভেজাল প্রতিবেদন
২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩
বরাবর
সাধারণ সম্পাদক
কালের কণ্ঠ
গুলিস্তান, ঢাকা
বিষয়: খাদ্যে ভেজাল সমস্যা সমাধানে প্রতিবেদন।
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে, আপনার সম্পাদিত এবং বহুল প্রচলিত পত্রিকা “কালের কণ্ঠ” এ নিম্নোক “খাদ্যে ভেজাল নিরসন” শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে উক্ত সমস্যা সমাধান করা সুযোগ করে দেওয়ার মাধ্যমে আপনার মর্জি একান্তভাবে কামনা করছি।
বিনীত-
তহিদ হাসান
রায়পুরা, গোপালগঞ্জ
খাদ্যে ভেজাল নিরসন
খাদ্যে ভেজাল কথাটি আমরা সবসময়ই শুনে থাকি। চারিদিকে সবকিছুতেই ভেজাল মিশে রয়েছে। বর্তমানে ভেজালমুক্ত খাদ্য পাওয়া খুবই কঠিন। সবজি, মাছ, মাংস, ফল-মূল সবকিছুতেই এখন বিষাক্ত সব পদার্থ ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলো আমাদের শরীরে ভীষণ ক্ষতিকর ।
কিছু লোভী, অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় ভোক্তাদের সাথে ভেজালযুক্ত খাবার দিয়ে প্রতারণা করছে। ব্যবসায়ীরা এক পণ্য দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করতে নানারকম রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করছে। এতে আমাদের শরীরে অসংখ্য মারাত্মক রোগ বাসা বাধছে। আমরা হয়ে যাচ্ছি ক্যান্সারের রোগী। আমাদের কিডনি বিকল হচ্ছে, ফুসফুসজনিত রোগ বাড়ছে, উচ্চরক্তচাপ বাড়ছে এবং শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হচ্ছে।
এখন বাজারে থেকে আমরা সবাই ভেজালযুক্ত খাদ্য-দ্রব্য কিনছি, যেগুলো আমরা খালি চোখে বুঝতেও পারছি না। শহর থেকে গ্রাম সবজায়গায় এখন ভেজালযুক্ত খাবার বিক্রি হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমরা অকালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ব।
রাসায়নিক পদার্থ আমাদের শরীরে নানারকম ক্ষতি করছে। এমতাবস্থায় দ্রুত প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রশাসন তৎপর না হলে এরকম পরিস্থিতি বাড়বে বৈকি কমবে না। তাই, অসাধু, প্রতারক ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা দরকার তাদের এসব জঘন্য ধরনের কাজের জন্য।
আমরা জনসাধারণ মনে করি, নিচের কাজগুলো করলে খাদ্যে ভেজাল মেশানোর প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে।
- ভোক্তা অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করলে
- অপরাধকৃত ব্যবসায়ীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে।
- জনগণকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সচেতন করতে হবে।
খাদ্যে ভেজাল রোধে প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণ যদি তৎপর হয় তাহলে অবশ্যই এটি সম্ভব। এজন্য আমরা সাধারণ জনগণ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বিনীত
তহিদ হাসান (এলাকাবাসীর পক্ষ হতে)
রায়পুরা, গোপালগঞ্জ
বৃক্ষরোপন বিষয়ক সংবাদ প্রতিবেদন
সবিনয় নিবেদন এই যে, আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে আপনার সম্পাদিত এবং বহুল প্রচলিত পত্রিকা ” প্রথম আলো” তে “গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান” শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে জনসাধারণের মধ্যে কাজ লাগানোর আগ্রহ সৃষ্টি করার মাধ্যমে আপনার একান্তভাবে মর্জি কামনা করছি।
নিবেদক
মো. রাহুল ইসলাম
ডিঙ্গেদহ, চুয়াডাঙ্গা
গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান
গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ আমাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে উপকার করে থাকে। গাছ আমাদেরকে বেঁচে থাকার জন্য শস্য, ফলমূল, জ্বালানি এবং শীতল পরশ ছায়া দেয়। গাছ আমাদের থেকে কার্বনডাইঅক্সাইড গ্রহণ করে আমাদের বেঁচে থাকার অন্যতম অবলম্বন অক্সিজেন দিয়ে থাকে।
অক্সিজেন ছাড়া আমরা এক মুহূর্তও বাঁচতে পারি না। আমাদের জীব জগতের সকল প্রাণীর খাবারের অন্যতম উৎস গাছ। গাছ আমাদেরকে বিশাল বিশাল ঝড়ের কবল থেকে বাঁচায়। আবার যথাসময়ে বৃষ্টি হতে সাহায্য করে। গাছ পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড কমিয়ে অক্সিজেন বাড়াচ্ছে। যার কারণে পৃথিবী আমাদের বাসযোগ্য হয়ে রয়েছে।
গাছ আমাদের এত উপকার করা সত্ত্বেও আমর বিনিময়ে গাছের ক্ষতি করছে। আমরা অকৃতজ্ঞ এবং নির্দয়ের মতো সব গাছ কেটে ফেলছি। বনজঙ্গল কেটে সাফ করে আমরা নগরায়ন করছি। আসলে এতে যে আমাদের কতটা ক্ষতি হচ্ছে তা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না।
গাছ আমাদের পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ সকল বিষাক্ত গ্যাস শুষে নিয়ে অক্সিজেন ছাড়ছে। যদি গাছ পৃথিবী থেকে কমে যায় তাহলে কোন পরিস্থিতিতে আমরা পড়ব, তা নিশ্চয় আন্দাজ করতে পারছি।
এত কিছু বোঝা সত্ত্বেও আমরা অবিবেচকের মতো গাছ কাটছি। হ্যাঁ, গাছ আমাদের প্রয়োজন এক-দুটো কাটা লাগতেই পারে কিন্তু তার বিনিময়ে আমাদের আরো দুই-চারটা করে গাছ লাগানো উচিত। অর্থাৎ একটা গাছ কাটলে তার বদলে দুইটা গাছ লাগানো উচিত।
আমাদের পৃথিবী গাছে সবুজ থাকলে পৃথিবী সুস্থ থাকবে। সর্বোপরি, আমরা সুস্থ থাকব। কিন্তু আমরা গাছ লাগানোর প্রতি খুবই উদাসীন। গাছ ব্যতীত আমাদের অস্তিত্ব অকল্পনীয়। তাই, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বেশি বেশি করে গাছ লাগাতে হবে। সরকারকে এবিষয়ে উদ্বেগ হতে হবে। বিভিন্ন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে গাছের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এক অংশ জায়গাও যেন খালি না থাকে। যেখানে একটু ফাঁকা থাকবে, সেখানেই একটি গাছ লাগানো উচিত। তাহলে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সুস্থ থাকবে।
তাই, এবিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি। বিভিন্ন কর্মসূচি, ব্যানার- বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গাছ লাগানো কর্মসূচি বাড়াতে হবে। সর্বোপরি, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। তাই আবারো বলি- “গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান।”
উপরে উল্লিখিত সকল প্রতিবেদনের শেষে একটা খাম যুক্ত করতে হবে।
সারসংক্ষেপ
আশা রাখছি প্রতিবেদন কি এবং সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কিত একটা তথ্যবহুল ব্লগ উপস্থাপন করতে পেরেছি।
আমাদের একাডেমিক শিক্ষাজীবনেও প্রতিবেদন লিখতে হয়। বিশেষত এসএসসি পরীক্ষায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিবেদন কিংবা খাদ্যে ভেজাল প্রতিবেদন লিখতে হয়।
এজন্য এই ব্লগে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের নমুনা তুলে ধরেছি। যাতে শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবেদন কেমন হয় সেটা বুঝতে পারে।