আজকের এই সম্পূর্ণ ব্লগ জুড়ে ডিজিটাল মুদ্রা Crypto Currency সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করব। ক্রিপ্টোকারেন্সি কি, এটি কিভাবে কাজ করে, ক্রিপ্টোকারেন্সির ভবিষ্যৎ কী তা খুঁজে দেখার চেষ্টা চালাবো আজকের ব্লগে।
আশা করছি আপনি শেষ পর্যন্ত সাথে থাকবেন এবং এটুকু আশ্বস্ত করছি যে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লে ক্রিপ্টোকারেন্সির নাড়িনক্ষত্র জানতে পারবেন।
Photo credit: Pexels.com |
মানব সভ্যতার শুরুর দিকে মানুষ বনে জঙ্গলে ঘুরে পশুপাখি শিকার, ফলমূল সংগ্রহ করে খেত। এরপরে যখন ধীরে ধীরে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করতে শুরু করে তখন থেকে চাষাবাদ শুরু হয়।
অনেকে অনেক ধরনের চাষাবাদ করত, পশুপাখি শিকার করত। কেউ ধান চাষ করত, কেউ পশু শিকার করত, আবার কেউ মাছ সংগ্রহ করত।
কিন্তু কেউ একজন তো শুধু চাল, শুধু মাংস, কিংবা শুধু মাছ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে না। তারা যাতে একে অপরের সাথে নিজেদের খাবার বিনিময় করতে পারে সেরকম একটা প্রথা চালু করল। এটাকে বলা হতো বিনিময় প্রথা বা Barter System.
কিন্তু এই বিনিময় প্রথায় একটা সমস্যা দেখা দিল। কেউ যদি ৫ কেজি চাল দেয় তাহলে তার বিনিময়ে সে কতটুকু মাছ কিংবা মাংস পাবে এই ধরনের বিনিময় সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়।
এই জটিলতা কাটিয়ে উঠতে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য মাধ্যম হিসেবে মধ্যযুগে কড়ি, শামুক, ঝিনুক, স্বর্ণ, রৌপ এর ব্যবহার শুরু হয়। পরবর্তীতে আধুনিক যুগে কয়েন ও কাগজি মুদ্রা চালু হয়, যা এখনও প্রচলিত আছে। এভাবেই মুদ্রা আবিষ্কার হয়।
কিন্তু এই বিনিময়ের মাধ্যম কাগজি মুদ্রা কিংবা ধাতব মুদ্রায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। বর্তমানে এটি আরো আধুনিক রূপ ধারণ করেছে। চালু হয়েছে ডিজিটাল মুদ্রা বা Digital Currency। যদিও এই ডিজিটাল মুদ্রা বিশ্বের সব দেশে বা সবখানে সমানভাবে চালু হয়নি।
আজকের এই ব্লগে আমরা ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কথা বলব।
ক্রিপ্টোকারেন্সি কি? (What is crypto currency in bengali?)
ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো এমন এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা যেটার উৎপাদন, সংরক্ষণ কিংবা বিনিময় প্রক্রিয়া কোনো একক প্রতিষ্ঠান (যেমন সরকার কিংনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। এটি বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়ায় কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্য:
- এটি কোনো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়
- এটি সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল, যা স্পর্শ করা কিংবা দেখা যায় না
- পরিচয় গোপন রেখে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন করা যায়
- ক্রিপ্টোকারেন্সি দ্বারা কোনো লেনদেন সংঘটিত হলে তা পরিবর্তন কিংবা বাতিল করা সম্ভব নয়
ক্রিপ্টোকারেন্সি এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
বর্তমানে সারাবিশ্বে ২৫ হাজারের বেশি ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা রয়েছে। কিন্তু যখন এই ডিজিটাল মুদ্রা তথা ক্রিপ্টোকারেন্সি এর যাত্রা শুরু হয়েছিল খুব বেশি সময় হয়নি।
বিশ্বের সর্বপ্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো বিটকয়েন। ২০০৮ সালের ৩১ অক্টোবর সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামের একজন ব্যক্তি বা গ্রুপ ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিটকয়েন কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কিত একটি আর্টিকেল প্রকাশ করে।
ধারণা করা হয় ওই সময় থেকেই বিটকয়েন আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এরপরে ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে শাতোশি নাকামতো প্রথম ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে Block তৈরি করে এবং বিটকয়েন মাইনিং করে।
বিটকয়েন মাইনিংয়ে SHA-256 হ্যাশ ফাংশন ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে Namecoin, Litecoin, ২০১২ সালে Peercoin আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে ক্রিপ্টোকারেন্সি এর যাত্রা শুরু হয়।
বর্তমান সময়ের কিছু জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো Bitcoin, Ethereum, Solana, BNB, Dogecoin, Cardano ইত্যাদি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি এর দুইটি মূল প্রযুক্তি
এই ডিজিটাল মুদ্রার জন্য প্রধান যে দুটি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় তা হলো ব্লকচেইন এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি। ব্লগের এই অংশে আমরা Cryptocurrency এর মূল টেকনোলজি নিয়ে আলোচনা করব।
১. ব্লকচেইন প্রযুক্তি
Blockchain Technology হলো এমন একটি ডাটাবেইজ মেকানিজম যেখানে অর্থনৈতিক লেনদেনগুলো ব্লক আকারে সংরক্ষণ করা হয় এবং এই লেনদেনের তথ্য নেটওয়ার্কের অভ্যন্তরে থাকা অন্য ব্যক্তিরা দেখতে পান। যখন একাধিক লেনদেন সংঘটিত হয় তখন একাধিক ব্লক তৈরি হয়, এবং প্রত্যেকটা ব্লক তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ব্লকের সাথে চেইনের মতো যুক্ত থাকে।
আরো বিস্তারিত বুঝতে উপরের ছবিটি খেয়াল করুন। এখানে Block-1 এ A ও B ব্যক্তি লেনদেন করেছে, Block-2 এ C ও D ব্যক্তি এবং Block-3 এ E ও F ব্যক্তি লেনদেন করেছে।
প্রত্যেকটা ব্লক তার আগের ও পরের ব্লকের সাথে জড়িত আছে। এক্ষেত্রে তারা হ্যাশ-এর মাধ্যমে একটি আরেকটির সাথে জড়িত।
ব্লক চেইন নেটওয়ার্কে একাধিক লেনদেন হলে প্রতিটি ব্লক একে-অপরের সাথে জড়িত থাকে। এজন্য এই প্রযুক্তি অনেক বেশি নিরাপদ। কেউ যদি কোনো একটি ব্লকের ডেটা চেঞ্জ করতে চায় তাহলে তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ব্লকের ডেটা চেঞ্জ করতে হবে, যেটা প্রায় অসম্ভব।
২. ক্রিপ্টোগ্রাফি প্রযুক্তি
Cryptography হলো কোনো নেটওয়ার্কে তথ্য আদান-প্রদানে তথ্যের নিরাপত্তা পদ্ধতি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য আদান-প্রদান করলে কেবল প্রেরক ও গ্রাহক ছাড়া কিংবা তাদের অনুমতি ছাড়া প্রেরিত তথ্য অন্যকেউ পড়তে পারে না।
এই প্রযুক্তিতে ইউনিক কোড ও সিকিউরিটি কি ব্যবহার করা হয়। হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারে ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদান থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের অনেক জায়গায় ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়।
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বেশ কয়েক ধরনের ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়। যেমন: Hashing, Public Key, Public-private Key, Cipher ইত্যাদি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রানজেকশন ও মাইনিং
Crypto Currency এর লেনদেন কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। সেগুলো নিচে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো।
- Initiation: কোনো লেনদেন শুরু করতে প্রেরককে একটি প্রাইভেট key ব্যবহার করে একটি ব্লক তৈরি ও সাইন করতে হয়। এ সময় গ্রাহকের ওয়ালেট অ্যাড্রেস, লেনদেনের পরিমাণ ও লেনদেন ফি উল্লেখ করতে হয়। এরপরে লেনদেনটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে ব্রডকাস্ট হয়।
- Verification: যখন ব্লক তৈরি হয়ে যায় তখন উক্ত ব্লকচেইনের অধীনে থাকা Node-গুলো এটা যাচাই করে যে প্রেরকের ওয়ালেটে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রয়েছে কিনা, প্রেরক সঠিক key ব্যবহার করেছে কিনা ইত্যাদি।
- Recording: লেনদেনটি যাচাই করা হয়ে গেলে এটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের একটি ব্লকে যুক্ত করা হয়। এটিকে রেকর্ডিং বলে।
- Confirmation: যখন একাধিক নোড লেনদেনটিকে সুরক্ষিত ও অপরিবর্তনীয় হিসেবে নিশ্চিত করে তখন লেনদেনটি চুড়ান্ত ও সফল হয়।
এই প্রক্রিয়াগুলি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সম্পন্ন হয়।
ব্লকচেইনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের Consensus Mechanism
ব্লকচেইনের মতো বিকেন্দ্রভূত নেটওয়ার্কে লেনদেনের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো এই Consensus Mechanism.
এটি নিশ্চিত করে যে ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে থাকা সকল নোড (Nodes) কোনো লেনদেন বৈধ ও সঠিকভাবে রেকর্ড হওয়াকে সমর্থন করে।
ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য Consensus Mechanism সম্পর্কে নিচে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো।
- Proof of Work (PoW): এটিতে ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে থাকা মাইনাররা জটিল গানিতিক সমস্যা সমাধান করার মাধ্যমে লেনদেনের বৈধতা যাচাই ও নতুন ব্লক তৈরি করে। প্রুফ অফ ওয়ার্ক মেকানিজম বেশ পুরোনো প্রযুক্তি। বিটকয়েন মাইনিংয়ে এটি ব্যবহার করা হয়।
- Proof of Stake (PoS): এটি PoW এর একটি বিকল্প মেকানিজম হিসেবে চালু হয়েছিল। PoS শক্তিশালী, দক্ষ ও দ্রুততার সাথে কাজ করে, তবে PoW এর মতো নিরাপদ নয়। এতে লেনদেনের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য মাইনারদের পরিবর্তে Validator-দের ব্যবহার করা হয়। তাদের স্টেক ব্যালেন্সের পরিমানের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন করা হয়।
- Delegated Proof of Stake (DPoS): এটি PoS এর আরো দক্ষ ও নিরাপদ সংস্করণ। এতে ভেলিডেটরদের পরিবর্তে ডেলিগেটরদের ব্যবহার করা হয় কোনো লেনদেনের বৈধতা যাচাই করতে।
- Proof of Authority (PoA): এটি সাধারণত প্রাইভেট ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা হয়। PoA-তে ভেলিডেটরদের পরিচিতি ও সুনামের উপর ভিত্তি করা নির্বাচন করা হয় লেনদেনের বৈধতা যাচাইয়ের কাজে।
এর বাইরেও আরও কিছু consensus mechanism রয়েছে। যেমন Proof of Burn (PoB), Practical Byzantine Fault Tolerance (PBFT), HoneybadgerBFT ইত্যাদি।
ক্রিপ্টোকারেন্সি নেটওয়ার্কে মাইনিংয়ের ভূমিকা
Cryptocurrency হলো একটি বিকেন্দ্রীভূত নেটওয়ার্ক, অর্থাৎ এর কোনো নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ নেই। মূলত মাইনিংয়ের মাধ্যমেই এই নেটওয়ার্কে লেনদেন সম্পন্ন ও ক্রিপ্টোকারেন্সি উৎপাদিত হয়।
মাইনিং কিভাবে কাজ করে?
বিশেষ করে যেসব ব্লকচেইন নেটওয়ার্ক PoW Consensus Mechanism ব্যবহার করে সেগুলোতে লেনদেন যাচাই, নতুন ব্লক তৈরি করার প্রক্রিয়াকে মাইনিং বলে। যারা এই কাজটি করে তাদেরকে মাইনার বলা হয়।
মাইনাররা কম্পিউটেশনাল দক্ষতা ব্যবহার করে Proof of Work নামে পরিচিত বিভিন্ন জটিল গানিতিক সমস্যা সমাধান করে। নতুন কোনো লেনদেন সম্পন্ন করতে এই গানিতিক সমস্যার সমাধান করতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে ৫টি এআই টুল
যে মাইনার সর্বপ্রথম কোনো লেনদেনের জন্য গানিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারবে এবং সেটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হওয়ার মাধ্যমে যখন নেটওয়ার্কে নতুন ব্লক তৈরি হবে তখন সে মাইনারকে পুরস্কৃত করা হয়।
মাইনাররা কিভাবে আয় করে?
ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে লেনদেনের বৈধতা যাচাই ও নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত রাখার জন্য মাইনারদের পুরস্কার দেওয়া হয়। মাইনিং সফল হলে নতুনভাবে তৈরিকৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি ও লেনদেন ফি এর একটা অংশ মাইনারকে দেওয়া হয়। এভাবে মাইনাররা ক্রিপ্টোকারেন্সি আয় করে থাকে।
ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংয়ের সমস্যা
Proof of Work consensus ব্যবহৃত নেটওয়ার্কে মাইনিংয়ের জন্য যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় সেগুলোর হারওয়্যার (যেমন CPU, ASIC ইত্যাদি) খুব বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে।
ফলে একদিকে যেমন এটি ব্যয়বহুল, অন্যদিকে প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে বৈশ্বিক বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে আশার সংবাদ হলো প্রযুক্তিবিদরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কাজ করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেটওয়ার্কে PoW এর পরিবর্তে PoS consensus ব্যবহার করা হচ্ছে। যা তুলনামূলক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি
বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ২৫০০০ এর বেশি ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল মুদ্রা রয়েছে। তবে এগুলোর সব সমানভাবে জনপ্রিয় নয়।
এগুলোর প্রত্যেকটি কিছু আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নিচে আমরা কয়েকটি জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কে সংক্ষেপে জানবো।
- Bitcoin: বিশ্বের প্রথম ও বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো বিটকয়েন। একটি বিটকয়েনের বর্তমান মূল্য ৪১,১০০ ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৪৫ লাখের বেশি। এটির এখনকার মার্কেট ক্যাপ ৮০৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এটি মাইনিংয়ের জন্য PoW Consensus মেকানিজম ব্যবহার করা হয়।
- Ethereum: বিশ্বের দ্বিতীয় জনপ্রিয় ডিজিটাল মুদ্রা হলো Ethereum. বর্তমানে এর মার্কেট সাইজ হচ্ছে ২৬১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। প্রতিটি ইথিরিয়ামের মূল্য ২১৭০ ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার। Ethereum মাইনিংয়ের জন্য PoW ও PoS দুইধরনের মেকানিজম ব্যবহার করা হয়।
- Dogecoin: ডোজকয়েন সম্পর্কে মজার বিষয় হলো এটি একটি meme এর মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়েছিল। সফটওয়্যার প্রকৌশলী বিলি আরকুজ ও জ্যাকসন পালমার এটি তৈরি করেছিল। বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি এর জগতে এটি বেশ পরিচিত নাম।
- Litecoin: বিটকয়েনের সিলভার রূপ হিসেবে পরিচিত এই কারেন্সিটি দ্রুত লেনদেনের উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল। এটিও বেশ জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি, যার প্রতিটির দাম এখন ৭১ ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৮৮০ টাকা।
এছাড়াও আরো কিছু জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে। তারমধ্য অন্যতম হলো Binance Coin (BNB), Ripple, Cardano, Stellar ইত্যাদি।
তবে এত এত ক্রিপ্টোকারেন্সি এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মূল্যবান হলো Bitcoin. অন্য সকল কয়েন এটার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
সারাংশ
বিটকয়েন, ইথিরিয়াম, ডোজকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি এর ব্যবহার দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মুদ্রা দিয়ে সহজেই বৈদেশিক লেনদেন করা যায়। আনুষ্ঠানিকতার ঝামেলা না থাকায় বৈদেশিক লেনদেনে ক্রিপ্টোকারেন্সি এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে।
তবে এর একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের মাধ্যমে Money Laundering বা অর্থ পাচার বেড়েছে। ফলে এটা যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্যই ক্ষতিকর।
অনেকে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করেন। যারা এ বিষয়ে খুব বেশি অভিজ্ঞ না তাদেরকে বিনিয়োগ না করার পরামর্শ দিব। কারণ এগুলো মূল্য অনেক বেশি ওঠা-নামা করে। ফলে লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে।
আশা করব আজকের ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। চেষ্টা করেছি Cryptocurrency সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সংক্ষেপে ও সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে। ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এবং কিভাবে কাজ করে সে বিষয়ে আরো কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।