কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি ২০২৪ ও আবেদন ফরম
On Page SEO কি এবং কিভাবে করবেন তা জানুন
ঘরে বসে দ্রুত ইংরেজি শেখার সহজ উপায় ৬টি

On Page SEO কি এবং কিভাবে করবেন তা জানুন

কোনো একটা ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য অন পেজ এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। এটি ছাড়া ওয়েবসাইটে অর্গানিক উপায়ে ট্রাফিক পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

আজকের ব্লগে আমরা অন পেজ এসইও কি তা জানবো। সেই সাথে On Page SEO কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ধাপে ধাপে আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি একজন ব্লগার হয়ে থাকেন কিংবা একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে এই ব্লগটি আপনার হাতেখড়ি হতে পারে।

দিনে দিনে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট ও ব্লগ ওয়েবসাইটে পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বে SEO Expert এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

অন পেজ এসইও কি
অন পেজ এসইও কি?

তো চলুন আর বাড়তি কথা না বাড়িয়ে আজকের ব্লগের মূল আলোচ্য বিষয়ে কথা বলা যাক।

অন পেজ এসইও কি? (What is on-page SEO in bengali?)

অন পেজ এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশনের এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জিনিস পরিবর্তন ও পরিমার্জন করা হয়।

একটা ওয়েবসাইটকে কিংবা ওয়েবসাইটের কোনো পেজকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করাতে হলে এর জন্য সঠিকভাবে SEO করতে হয়।

এই সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন বা এসইও দুই ধরনের। একটি হলো অন পেজ এসইও আর অন্যটি হলো অফ পেজ এসইও।

এই ব্লগে আমরা শুধু on page seo কি তা সম্পর্কে জানবো। অন্য প্রকার সম্পর্কে আরেকটি ব্লগে আলোচনা করবো।

অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয়?

আগেই বলেছি অন পেজ এসইও করতে হয় ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরে। এর জন্য কয়েকটা বিষয় নিয়ে কাজ করতে হয়। সেগুলো সম্পর্কে আমরা একটা একটা করে জানবো।

একটা ওয়েবসাইট বা ওয়েবপেজকে গুগলের প্রথম পেজে আনার জন্য কয়েকটা ফ্যাক্টর মাথায় রাখতে হয়। এগুলো হলো On-page SEO এর ধাপসমূহ:

  1. কিওয়ার্ড রিসার্চ
  2. টাইটেল ও সাব-টাইটেল অপ্টিমাইজেশন
  3. ইমেজ অপ্টিমাইজেশন
  4. কিওয়ার্ড ডেনসিটি
  5. লিংক বিল্ডিং
  6. পার্মালিংক অপ্টিমাইজেশন
  7. মেটা ডেসক্রিপশন
  8. সাইটের স্পিড অপ্টিমাইজেশন

এবার আসুন এই ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে বিশদভাবে কথা বলা যাক।

১. কিওয়ার্ড রিসার্চ

একটা আর্টিকেলকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো সঠিক কিওয়ার্ড খুঁজে বের করা।

হাই সার্চ ভলিউম ও লো কম্পেটিটিভ কিওয়ার্ড খুঁজে বের করে আপনি যেমন খুব দ্রুত গুগলে র‍্যাঙ্ক পেতে পারেন, ঠিক তেমনি ভুলক্রমে হাই কম্পেটিটিভ কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করলে কখনোই র‍্যাঙ্কের মুখ দেখবেন।

২. টাইটেল ও সাব-টাইটেল অপ্টিমাইজেশন

আপনাকে এমন একটি টাইটেল লিখতে হবে এবং এমন কিছু সাব-টাইটেল লিখতে হবে যা এসইও ফ্রেন্ডলি।

কিওয়ার্ড রিসার্চ করে প্রাপ্ত মূল কিওয়ার্ড (Focus keyword) অন্তত একবার যেন টাইটেলে থাকে। আর টাইটেল হতে হবে eye catchy যা সহজেই একজন আপনার লেখাটা পড়তে আগ্রহী হয়।

মনে করি, আমার ফোকাস কিওয়ার্ড হলো “ইংরেজি শেখার উপায়”। এখন আমাকে এমনভাবে টাইটেল লিখতে হবে যেন সেখানে অন্তত একবার ফোকাস কিওয়ার্ড থাকে এবং তা যেন দৃষ্টিনন্দন হয়।

এক্ষেত্রে আমি “ঘরে বসে দ্রুত ইংরেজি শেখার সহজ উপায়” এই টাইটেলটা ব্যবহার করতে পারি। খেয়াল করে দেখুন এখানে আমি কিছু modifier word ব্যবহার করেছি যেমন: দ্রুত, সহজ ইত্যাদি।

আর টাইটেল অবশ্যই ৬০ ক্যারেক্টারের বেশি হতে পারবে না। চেষ্টা করবেন এটি যেন সবসময় ৫০-৫৬ ওয়ার্ডের মধ্যে থাকে।

আর সাব-টাইটেল নির্বাচনের সময় এমন সাব-টাইটেল নিবেন যেগুলো ফোকাস কিওয়ার্ডের সাথে প্রাসঙ্গিক এবং মানুষ গুগলে সার্চ করে।

আপনি যদি কোনো কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল ব্যবহার করেন তাহলে এই ধরনের অনেক কিওয়ার্ড খুঁজে পাবেন। এছাড়া গুগলে ফোকাস কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলেও রিলেটেড কিছু কিওয়ার্ড পাবেন যেগুলো মানুষ গুগলে সার্চ করে।

অন পেজ এসইও

উপরের ছবিটি দেখুন। আমি গুগলে “ইংরেজি শেখার উপায়” লিখে সার্চ করেছিলাম। গুগল আমাকে উপরের রিলেটেড কিওয়ার্ড সাজেস্ট করছে। মানে এগুলো লিখেও মানুষ সার্চ করে।

৩. ইমেজ অপ্টিমাইজেশন

On-page SEO এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো এই ইমেজ অপ্টিমাইজেশন। আর্টিকেলে আপনাকে এমনভাবে ইমেজ ইনসার্ট করতে হবে যেন তার সাইজ খুব কম হয়।

ইমেজের সাইজ ২০-৩০ কিলোবাইট এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন। এজন্য Image Compressor টুল ব্যবহার করতে পারেন। এরকম একটি টুল হলো Tinypng ওয়েবসাইট।

ইমেজ কমপ্রেস

এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ছবিটি সিলেক্ট করে আপলোড করলেই তা কমপ্রেস হয়ে যাবে। এই টুলটি ৩০%-৮০% পর্যন্ত সাইজ কমিয়ে দিতে পারে।

অধিকাংশ সময় আপনার ছবিটি JPG অথবা JPEG ফরম্যাটে থাকবে। তবে এই ফরম্যাট ওয়েবসাইট বা এসইওর জন্য বেশি ভালো না।

এজন্য আপনাকে WEBP ফরম্যাটের ইমেজ ব্যবহার করতে হবে। WEBP ফরম্যাট ব্যবহার করলে সাইটের স্পিড বৃদ্ধি পায় যা গুগলের চোখে ইতিবাচক।

ইমেজ কমপ্রেস

ইমেজের ফরম্যাট চেঞ্জ করতে Convertio নামের একটা ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমে ওয়েবসাইটে গিয়ে কিছুক্ষণ আগে কমপ্রেস করা ছবিটি আপলোড করুন এবং jpeg to webp সিলেক্ট করে convert বাটনে ক্লিক করলেই ছবিটি webp তে রূপান্তর হয়ে যাবে।

যখন আর্টিকেলের মধ্যে ছবি ইনসার্ট করবেন তখন alter tag বা alter text-এ ফোকাস কিওয়ার্ড লেখার চেষ্টা করবেন।

৪. কিওয়ার্ড ডেনসিটি

কিওয়ার্ড ডেনসিটি হলো কোনো আর্টিকেলে ফোকাস কিওয়ার্ডের পরিমান বা ঘনত্ব। অর্থাৎ আপনার আর্টিকেলে মূল কিওয়ার্ড কতবার ব্যবহৃত হয়েছে তার পরিমানকে Keyword Density বলে।

এই কিওয়ার্ড ডেনসিটি কাম্য পরিমানে রাখা খুবই জরুরি। যদি অনেক বেশিবার কিওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে সেটি সার্চ ইঞ্জিন ভালোভাবে নেবে না। আর যদি খুব কম পরিমানে ব্যবহার করেন তাহলে তা র‍্যাঙ্ক করবে না।

এজন্য অন পেজ এসইও করার নিয়ম হিসেবে কিওয়ার্ডের পরিমাণ কত হবে তা জানা দরকার। বেশিরভাগ এসইও স্পেশালিষ্ট বলেন প্রতি হাজার শব্দে ৮-১০ বার মূল কিওয়ার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও জানুন: টাকা ইনকাম করার অ্যাপ

আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, আপনার মূল কিওয়ার্ডটা যেন আর্টিকেলের প্রথম প্যারাগ্রাফে অন্তত একবার যেন থাকে। সম্ভব হলে লেখার একদম শুরুতে রাখবেন।

৫. লিংক বিল্ডিং

অন পেজ এসইও কি তা জেনেছেন। এবার লিংক বিল্ডিং সম্পর্কে জানতে হবে। এটি On-page SEO এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

আপনি যখন কোনো আর্টিকেল পাবলিশ করবেন তখন সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন ওই আর্টিকেলে প্রাসঙ্গিক কিছু আর্টিকেলের লিংক জুড়ে দেওয়ার।

অন পেজ এসইও কি

প্রাসঙ্গিক পোস্টগুলো অবশ্যই আপনার একই ওয়েবসাইটের হতে হবে এবং তা হাইপারলিংক করে দিতে হবে। উপরের ছবিতে খেয়াল করুন আমি এভাবে একটা প্রাসঙ্গিক পোস্টের লিংক যুক্ত করেছি।

৬. পার্মালিংক অপ্টিমাইজেশন

পার্মালিংক হলো আপনার কোনো পোস্টের URL। ওয়েবপেজকে গুগলের প্রথম পেজে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য সঠিকভাবে পার্মালিংক লিখা জানতে হবে।

পার্মালিংক লেখার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন। যেমন:

  • পার্মালিংক যতটা সম্ভব ছোট রাখতে হবে।
  • পার্মালিংকে মূল কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
  • পার্মালিংকে একাধিক ওয়ার্ড থাকলে সেগুলোর মাঝে হাইফেন ব্যবহার করতে হবে। যেমন ..seo-tutorial

উপরের এসব বিষয় খেয়াল রাখলে আপনার পোস্টের পার্মালিংক অপ্টিমাইজড হয়ে যাবে।

৭. মেটা ডেসক্রিপশন

মেটা ডেসক্রিপশন হলো সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ওয়েবসাইট ও পোস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া। এটি সাধারণত HTML ট্যাগে হয়ে থাকে।

সঠিকভাবে মেটা ডেসক্রিপশন লেখা অন পেজ এসইও এর একটা উল্লেখযোগ্য প্র‍্যাক্টিস। মেটা ডেসক্রিপশন হবে ১৫০ ক্যারেক্টারের মধ্যে এবং তাতে অন্তত একবার মূল কিওয়ার্ড থাকবে।

৮. সাইটের স্পিড অপ্টিমাইজেশন

যে সাইটের স্পিড যত বেশি ইউজার সে সাইট ভিজিট করতে তত আগ্রহী হয়। আপনার সাইটের স্পিড যদি খুবই বিভৎস অবস্থায় থাকে তাহলে এটি দ্রুত সমাধান করতে হবে।

সাইটের স্পিড চেক করার কিছু টুল রয়েছে। এর মধ্যে গুগলের Pagespeed Insights ও GTMetrix অন্যতম।

এখানে আমি GTMetrix টুলটা ব্যবহার করেছি। ওয়েবসাইটের স্পিড চেক করার জন্য গুগলে GTMetrix লিখে সার্চ করে তাদের ওয়েবসাইটে চলে যান।

অন পেজ এসইও কিভাবে করতে হয়

ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সেখানে লিংক ইনপুট করার একটা বক্স দেখতে পাবেন। তাতে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে সার্চ করুন।

এখানে আমাদের সাইটের স্পিড দেখতে পাচ্ছি। Overall Speed দেখাচ্ছে A Grade। আপনার সাইটের সবসময় কমপক্ষে A- স্পিড রাখার চেষ্টা করবেন। তবে A অথবা A+ হলে তা সবচেয়ে উত্তম।

অন পেজ এসইও কি তার ইতিকথা

ধন্যবাদ আপনাকে এতক্ষণ সময় নিয়ে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ার জন্য। আশা করবো এই ব্লগটি আপনার উপকারে এসেছে।

এমন বিভিন্ন প্রয়োজনীয় বিষয়ে পড়তে চাইলে আমাদের বাংলাদি ব্লগটি ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ রইলো। এছাড়া অন পেজ এসইও কি সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।

Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *